অমি রহমান পিয়াল

মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক কে? বছর কয়েক আগে তারেক জিয়া তার আব্বুরে প্রথম প্রেসিডেন্ট দাবি করছিলো। কোনো পাড়ার? কোন ওয়ার্ডের পরিষ্কার না। তবে স্বাধীনতা ঘোষণার অর্থাৎ স্বাধীনতা দিবসের অর্থাৎ ২৬ মার্চের একদিন পর অর্থাৎ ২৭ মার্চ সন্ধ্যা বেলা অর্থাৎ সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে তার আব্বু কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থিকা যে ঘোষণা পাঠ করছিলেন সেখানে তার বলা লাগছিলো অন বিহাফ অব আওয়ার সুপ্রিম লিডার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। 

মুক্তিযুদ্ধে নায়কের অভাব নাই। সবচেয়ে বড় নায়ক তাজউদ্দীন আহমদ, যার নেতৃত্বে তারেকের আব্বু সেক্টর কমান্ডার হিসেবে ৫০০ রূপী মাসিক বেতনে যুদ্ধ করছেন। কিন্তু সেই তাজউদ্দীনরেও মাথার উপরে রাষ্ট্রপতি হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানরে রাখতে হইছে। একাত্তরে বাঙালি সবাইরে চিনতো না। কে জিয়া, কে তাজউদ্দীন, কে ওসমানী, কে হরিদাস পাল। কিন্তু সবাই চিনতো শেখ মুজিবরে। তারা তারে ভোট দিছে, ভোট দিছে তার ঘোষিত ৬ দফার পক্ষে, ভোট দিছে তার স্বায়ত্বশাসনের পক্ষে। গলা মিলাইছে তার জয় বাংলার পক্ষে, গলা মিলাইছে ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম’ উচ্চারণে। মাইনা নিছে তার ‘আমি যদি হুকুম দিবার নাও পারি’ উচ্চারণ। সেই মুজিবরে ছাড়া স্বাধীনতা পূর্ণতা পায় কীভাবে? আর এই জিনিসটাই পরিষ্কার হইয়া গেছে ১০ জানুয়ারি ১৯৭২ সালে। 

বাংলাদেশের মানুষ সেদিন জিয়ারে দেখতে ছুইটা গেছে ঢাকা? উত্তাল জনসমুদ্র আছড়াইয়া পড়ছে কি তাজউদ্দীনরে দেখতে? না। তারা গেছে শেখ মুজিবরে দেখতে, বঙ্গবন্ধুরে দেখতে, তারে স্বাগত জানাইতে। বাঙালি তো বাঙালি, ইন্ডিয়ান আর্মির জোয়ানরা অফিসাররা ডিসিপ্লিন ভুইলা ছুইটা গেছে তারে একবার ছুঁইয়া দেখতে। মানুষটা স্বপ্নের নাকি বাস্তব। কে সেই মহাপুরুষ যে নিজের জীবন বন্ধক রাইখা বাঙালিরে স্বাধীনতা আইনা দিছে? কে সেই মহামানব যার অনুপস্থিতিতে একটা অসমান যুদ্ধ জিতা নেয় তারে আদর্শ মানা জাতিশক্তি! বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। 

সেদিন সেই ১০ জানুয়ারি দুধ আর পানি আলাদা হইয়া গেছে। সারা দুনিয়া উত্তর পাইয়া গেছে কে সেই মহানায়ক। আমারে তোমরা অপছন্দ করো, ঘৃণা করো, গালি দাও আমি তার আদর্শ প্রচার করি তাই। তার রাজনীতিরে ধারণ করি তাই। ডু আই গিভ আ শিট? আয়াম ব্লেসড ম্যান। লেখক : গবেষক ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট। ফেসবুক থেকে